প্রকাশিত: ০১/০২/২০১৮ ৮:৩৫ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৭:১৬ এএম

উখিয়া নিউজ ডেস্ক::
প্রতিটি পরিবারকে একটি ইউনিট ধরে রোহিঙ্গাদের তথ্য দিতে হবে মিয়ানমারের এমন শর্ত পূরণে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) সঙ্গে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্রিক নিবন্ধন করে প্রতিজন রোহিঙ্গাকে আলাদা ধরে। ইউএনএইচসিআর পরিবারকে একটি ইউনিট ধরে ডেটাবেজ তৈরি করে। ১৬ জানুয়ারি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে গঠিত জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের পরিবারকে ইউনিট ধরে তথ্য সরবরাহের শর্ত দেয়। সেই শর্ত পূরণেই চুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ। সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ ও ইউএনএইচসিআর তথ্য বিনিময় করবে। বাংলাদেশ ইউএনএইচসিআরের তথ্য তৃতীয় পক্ষের কাছে হস্তান্তর করতে চাইলে সংস্থাটির অনুমতি লাগবে। এখানে শুধু ত্রাণ সহযোগিতা সুনির্দিষ্ট চাহিদা অনুযায়ী পৌঁছে দেওয়া এবং শনাক্তকরণের জন্য তথ্য বিনিময়ের চুক্তিটি করা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, গত শুক্রবার বাংলাদেশ ও ইউএনএইচসিআর তথ্য বিনিময় চুক্তিতে সই করে। যার মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে থাকা তথ্যের সঙ্গে ইউএনএইচসিআরের সংগ্রহ করা তথ্য সমন্বয় করে মিয়ানমারের শর্ত অনুযায়ী তালিকা পাঠানো হবে। এ বিষয়ে ইউএনএইচসিআরের ঢাকায় কর্মরত এক কর্মকর্তা বলেন, এই চুক্তি সইয়ের ফলে দুই পক্ষের কাছে থাকা তথ্যের সমন্বয় হবে। ফলে একটি শক্তিশালী তথ্যভা-ার হবে। রোহিঙ্গাদের ত্রাণসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনায় আরও শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।

গত ১৬ জানুয়ারি প্রত্যাবাসনে গঠিত জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে রোহিঙ্গাদের বিস্তারিত তথ্য পেতে একটি ফরম চূড়ান্ত করে মিয়ানমার। ফরম অনুযায়ী বাংলাদেশ তথ্য দিলে তা যাচাই-বাছাই করবে মিয়ানমার। এ জন্য দুই মাস সময় পাবে দেশটি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। গত বছরের ২৩ নভেম্বর মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোতে ‘এগ্রিমেন্ট অন রিটার্ন অব ডিসপ্লেস পারসন ফর্ম রাখাইন স্টেট’ শীর্ষক চুক্তি স্বাক্ষর করে মিয়ানমার ও বাংলাদেশ। চুক্তির ১৩ নং ধারা অনুযায়ী গত ২৩ জানুয়ারি থেকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর কথা ছিল। কিন্তু পর্যাপ্ত প্রস্তুতি না থাকায় শুরু হয়নি।
গত ১৬ জানুয়ারি মিয়ানমারের নেপিদোতে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে সম্পাদিত ‘এগ্রিমেন্ট অন রিটার্ন অব ডিসপ্লেস পারসন ফর্ম রাখাইন স্টেট’ মাঠ পর্যায়ের চুক্তি অনুযায়ী, প্রতিটি পরিবারকে একটি ইউনিট ধরে বাংলাদেশ তথ্য সংগ্রহ করে যাচাই-বাছাইয়ের জন্য মিয়ানমারকে দেবে। যার মধ্যে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের অধিবাসী হওয়ার প্রমাণ ও তথ্য থাকবে। আর স্বাক্ষর হওয়া চুক্তির ‘৬ এর এ’ ধারা অনুযায়ী সম্ভব হলে দুই মাসের মধ্যে এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করে সত্যতা নিশ্চিত করবে মিয়ানমার।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চুক্তির ‘৬ এর এ’ ধারা অনুযায়ী যারা ফিরবেন তাদের অবশ্যই স্বেচ্ছায় মিয়ানমারে ফিরে আসতে চাইবেন এমন ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ হতে হবে। যেসব রোহিঙ্গা পরিবারের থেকে আলাদা হয়ে গেছে এবং পরিবারের সদস্যরা ফেলে গেছে তাদের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের আদালতের সনদ লাগবে। বাংলাদেশে জন্ম নেওয়া রোহিঙ্গা শিশুরা অবশ্যই মিয়ানমারের অধিবাসী। অনাকাক্সিক্ষত ঘটনায় জন্ম নেওয়া শিশুর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের আদালতের সনদ লাগবে।
ইউএনএইচসিআর জানায়, ২০১৭ সালের ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৭ লাখ ৬১ হাজার ৩২৮ রোহিঙ্গার গণনা করা হয়েছে। আর তাদের পরিবারের সংখ্যা ১ লাখ ৭৫ হাজার ৯২৯টি। এ গণনায় কুতুপালং ও বালুখালীতে ইউএনএইচসিআরের পূর্বের ক্যাম্পের ৩৩ হাজার ৫৩৮ জনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। আর ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর থেকে আগত ৬ লাখ ৪০ হাজার ২৬৯ রোহিঙ্গাদের পরিবারের সংখ্যা ১ লাখ ৪৮ হাজার ৩৫৮টি। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৬ লাখ ৮০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। এখন পর্যন্ত সংস্থাটি ৭২ শতাংশ রোহিঙ্গাদের গণনার আওতায় আনতে পেরেছে।

পাঠকের মতামত

সিভিল সার্জন কার্যালয়ে স্বাস্থ্য সহকারী পরীক্ষায় প্রক্সি দিতে গিয়ে আটক ১

চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ে স্বাস্থ্য সহকারী নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় প্রক্সি দিয়ে উত্তীর্ণ হলেও মৌখিকে ধরা ...

গহীন পাহাড়ে কঠোর প্রশিক্ষণ, যা বললেন কুকি চিনের আকিম বম

বান্দরবানে পাহাড়ি সশস্ত্র সংগঠন কুকি–চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সামরিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নারী শাখার বান্দরবান সদর ও ...

নাইক্ষ‌্যংছড়ি উপজেলা নির্বাচন বর্জনে জেলা বিএনপির লিফলেট বিতরণ

বান্দরবান জেলার আসন্ন নাইক্ষ‌্যংছড়ি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জনে বান্দরবান জেলা বিএনপির দিনব‌্যাপি লিফলেট বিতরণ করা ...

নাইক্ষ‍্যংছড়ির গহিন অরণ্যে অভিযান, ৮টি আগ্নেয়াস্ত্রসহ বিপুল সরঞ্জাম উদ্ধার

বান্দরবানের নাইক্ষ‍্যংছড়ির গহিন অরণ্যে দুর্বৃত্তদের আস্তানায় হানা দিয়ে ৮টি আগ্নেয়াস্ত্র ও বিপুল অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম ...